:: হেলাল হোসেন কবির :: চলমান সংকট নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তিস্তা পাড়ের মানুষের। প্রতি বছর ঘর-বাড়ি হারায় ও জমির ফসল ক্ষতি হওয়া যেন এখানে রীতিতে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। তাই বিষয় আর ঘোলাটে না করে পরিস্কার ভাবে বাংলাদেশকে মুখ খুলতে হবে।
ভারতের পানি ছেড়ে দেয়ার কারনে প্রতি বছর তিস্তা পাড়ে বন্যা সৃষ্টি হয়। যার ফলে এখানকার মানুষ হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল ঘরে তুলতে পারেনা। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোন সময় সেই ক্ষতির তালিকাও প্রকাশ করা হয়নি। এতো বছর ধরে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করার কারণে ভারতের কাছে এই ক্ষতির কারণ জানতে চাওয়া হয়নি।
ভারত পূর্ব কোন বার্তা না দিয়ে হঠাৎ করে তাদের মন মত পানি ছেড়ে দিয়ে আসছে দীর্ঘ বছর ধরে। যার ফলে তিস্তা পাড়েও হঠাৎ বন্যা দেখা দেয়। কখন ভারত পানি ছেড়ে দেয় তা এখানকার মানুষ বলতে পারে না। তাই তিস্তা পাড়ের মানুষের পূর্ব প্রস্তুতিও থাকে না। ভারতের পানি ঢুকে তাদের স্বপ্ন নষ্ট করে দেয়। এই পানির কারণে প্রতি বছর ঘর-বাড়ি, গবাদিপশু, ফসল, বিলীন হয়ে যায়। সেই সাথে স্থানীয় বাজার, স্কুল-কলেজ, রাস্তা-ঘাট, রেললাইন ইত্যাদি মারাত্মক ক্ষতির স্বীকার হয়।
চলতি বছরে ভারত বাংলাদেশ ফেনী, চট্টগ্রামসহ বেশ কিছু জেলায় মানব বন্যা তৈরি করে তারপর তিস্তার বুকে পানি ছেড়ে দিয়ে নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধাসহ এলাকা হঠাৎ করে তলিয়ে দিয়েছে।
বৈষম্যের স্বীকার তিস্তা পাড়ের মানুষের ভাগ্যে ভারতের আগ্রাসনী ও এই অঞ্চলের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের সু-দৃষ্টিতে না থাকার ফলে ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারে না।
তিস্তার পানি নেমে যাচ্ছে, হাজার হাজার হেক্টর জমির কৃষকের ধানের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। ভারতের কারনে প্রতি বছর কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়ে যায়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতির তালিকা করে কৃষকদের এই ক্ষতি ভারতের কাছে নেওয়া উচিৎ। সেই সাথে কড়া ভাবে ভারতের কাছে দাবি তোলা দরকার যেন হঠাৎ করে পানি ছেড়ে দেওয়া না হয়, তাদের পানির কারণে এখানে যা ক্ষতি হবে সেই ক্ষতি পুষিয়ে দিতে হবে।
সেই সাথে তিস্তা মহাপরিকল্পনার দিকে বাংলাদেশ সরকারকে শুধু আশ্বাস নয় রংপুর অঞ্চলের মানুষের বিশ্বাস জোগাতে হবে।
[লেখক: কবি ও সাংবাদিক, লালমনিরহাট।]